মহামারি নভেল করোনাভাইরাস নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন একে অপরকে দোষারোপ করার মধ্য দিয়ে যে উত্তেজনা ফের তৈরি হয়েছে তাতে করে বিশ্বের দুই সর্ববৃহৎ অর্থনীতির দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তিতে ভঙ্গুর হলেও সম্প্রতি প্রণীত প্রথম দফার যে চুক্তিটি আশা জাগিয়েছিল তা আবার ভেঙ্গে পড়েছে।
দুই বছর আগে যখন দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য নিয়ে বিরোধ শুরু হয়েছিল তখন তা বিশ্ব অর্থনীতিকে যে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছিল। কিন্তু এই মহামারি বিশ্ব অর্থনীতিকে তার চেয়েও বেশি অনিশ্চিত এক অবস্থায় ফেলেছে। যদি এর মধ্যে এই দেশ দুটির বাণিজ্য বিরোধ আবার মাথাচাড়া দেয় তাহলে কেউ এর বিনাশ হয়তো ঠেকাতে পারবে না।
উভয় দেশই ভাইরাসটির হানায় বিপর্যস্ত। দুই দেশের অর্থনীতি কয়েক দশকের মধ্যে মারাত্মক এক মন্দাবস্থায় পড়েছে। চাকরি হারিয়েছে রেকর্ড সর্বোচ্চ মানুষ। যদিও চীন বলছে, তারা ভাইরাসটি সফলভাবে প্রতিরোধের মাধ্যমে এই মহামারি সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পার করে এসেছে কিন্তু অর্থবহ পুনরুদ্ধার থেকে অনেক দূরে বিশ্ব অর্থনীতি।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেওয়া ছাড়াও নতুন করে চীনা পণ্যে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এমন হলে পাল্টা পদক্ষেপ নিতে যে পিছপা হবে না, তেমন ইঙ্গিত এসেছে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকেও। আর এসব বিষয় আরও অনেক সংকটের মধ্যে ফেলে দেবে বিশ্বকে।
নভেল করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারি আকার ধারণ করার আগেই অবশ্য বাণিজ্য বিরোধের অবসানে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র যে চুক্তিতে উপনীত হয়েছিল তারই একটা ভঙ্গুর রুপ ধারণ করে। অনেকেই তখন এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। আর মহামারির পর একে অপরকে দোষারোপ সেই সংকট নিরসনকে প্রায় অসাধ্য করে তুলেছে।
গত জানুয়ারিতে কথিত ‘প্রথম ধাপের’ চুক্তিতে একমত হয় চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। এতে করে উভয় দেশ কিছু পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহারে সম্মত হয়। এর ফলে বেইজিং ১৬০ বিলিয়ন ডলারের পণ্যে শুল্ক ছাড়ের সুযোগ পায়। অপরদিকে এই দুই বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানির প্রতিশ্রুতি দেয় চীন।