মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন

ঢাকার সড়কে বাড়ছে ব্যস্ততা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০
  • ১৯৩

দুই পাশে দাঁড়িয়ে, বসে আড্ডা দিচ্ছেন তরুণ-তরুণীরা। আছেন বয়স্করাও। পাশে কয়েক মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেট কার পার্কিং করা। উল্টোপাশে বসে আছন ১০-১২ জন নারী, শিশু। একটু পরপর হর্ণ বাজিয়ে ছুটে যাচ্ছে প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল। রাজধানীর হাতিরঝিলের মহানগর ব্রিজের গতকাল দুপুরের দৃশ্য এটি। পাশেই হাতিরঝিল থানার টহল পুলিশের একটি পিকআপ। এদিক, ওদিক তাকাচ্ছিলেন পুলিশ সদস্যরা।

তারপর নিরবেই তারা চলে  গেলেন মগবাজারগামী হাতিরঝিলের রাস্তা দিয়ে। একইভাবে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর, শ্যামপুর, বাবুবাজার, মতিঝিল, পল্টন, কাকরাইল, রামপুরা এলাকায় দেখা গেছে মানুষের ভিড়। চেকপোস্টের ব্যারিকেড আছে কোনো কোনো স্থানে। পুলিশ নেই। কোথাও পুলিশ রয়েছে কিন্তু চেক করা হচ্ছে না। গতকাল বেলা ২টার দিকে রামপুরা এলাকায় দেখা গেছে অন্যান্য দিনের চেয়ে সড়কে যান চলাচল অনেক বেশি। ফুটপাতে মানুষের ভিড়। খুলেছে বিভিন্ন দোকান। ওয়াপদা রোড সংলগ্ন এলাকায় টহল পুলিশের একটি পিকআপ দেখা গেছে। পিকআপটি সেখানে দীর্ঘক্ষণ থামানো ছিলো। পাশেই কাঁচাবাজারে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। আরেকটু সামনে যেতেই চোখে পড়ে চেকপোস্টের ব্যারিকেড। ব্যারিকেডটি থানা পুলিশের। কিন্তু তখন পুলিশ সদস্য কাউকে সেখানে দেখা যায়নি। অবশ্য প্রায় ২০ মিনিট পরে চেকপোস্টের পাশের ফুটপাতে চেয়ারে বসেছিলেন দুই কনস্টেবল। একজনের নাম মাহবুব। রাস্তায় সমানতালে ছুটছে প্রাইভেট কার, মোটরাসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা। মালিবাগ, মতিঝিল, পল্টন, বাংলামোটর, কাওরানবাজার, এলাকায় দেখা  গেছে রাস্তার পাশে পাকির্ং করা সারি সারি মোটরসাইকেল। বাংলামোটরে কথা হয় জসিম নামে এক বাইক চালকের সঙ্গে। কুড়িল এলাকায় থাকেন তিনি। লকডাউনের আগে মোটরসাইকেল চালিয়েই চার সদস্যের পরিবার চালাতেন। করোনা ভাইরাসের কারণে প্রায় দেড় মাস যাবত বাইক চালানো বন্ধ। ধার দেনা করে চলেছেন এতদিন। আর পারছেন না। তাই বাইক নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয় থাকলেও অচেনা যাত্রীদের উঠাচ্ছেন বাইকে। জরুরি প্রয়োজনে যাত্রীরাও উঠছেন। তবে এতে রাস্তায় পুলিশ কোনো ঝামেলা করছে না বলে জানান তিনি। গতকাল ২টার পরে বাংলামোটর ও মগবাজার এলাকায় যানবাহনের ভিড় ছিলো।

বেলা তিন টার দিকে শান্তিনগর মোড়ে পুলিশ বক্সের সামনে বসে ছিলেন পাঁচ পুলিশ সদস্য। অন্তত সাতটি মোড়ে কোথাও ট্রাফিক পুলিশের দেখা না মিললেও সেখানে একজন ট্রাফিক কনস্টেবল বক্সের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। রাস্তায় তখন বিপুল যানবাহন। শান্তিনগরের কাঁচাবাজারের সামনে পার্কিং করা অনেক গাড়ি। এরমধ্যেই উল্টোপথেও চলছিলো রিকশা, মোটরসাইকেল। কোনো কোনো মোটরসাইকেলে চালকসহ তিনজনকে চলাচল করতেও দেখা গেছে।

পল্টন, কাকরাইল, মগবাজার, তালতলা এলাকায় কোনো চেকপোস্টে দেখা যায়নি। তবে পুলিশের টহল ছিলো। দুপুরে বনানী থেকে মহাখালী ফ্লাইওভার পর্যন্ত ছিলো যানজট। গণপরিবহনের দেখা না মিললেও ছিলো বিপুল প্রাইভেট গাড়ি। যাত্রাবাড়ী, আরামবাগ, বাড্ডা, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় ছাড়াও অন্যান্য দোকান খোলা দেখা গেছে। হাতিরপুল, মালিবাগ ও উলনবাজারে বেশ কয়েক কাপড় ও টেইলার্সের দোকানে ছিলো ভিড়। এমনকি খোলা ছিলো সেলুনও। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার সব প্রবশ পথে গাবতলী, পোস্তগোলা, বাবুবাজার ব্রিজ, সদরঘাট, আব্দুল্লাহপুর, পূর্বাচল ৩০০ ফুট, কাঁচপুর ব্রিজসহ  বেশকিছু মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট রয়েছে। তবে রাজধানীর ভেতরের চেকপোস্টগুলোতে পুলিশের অবস্থান থাকলেও যানবহান বা অপ্রয়োজনে চলাচলরত পথচারীদের বাধা দেয়া হয়নি। অবাধেই চলছে যানবাহন। রাস্তায় বের হচ্ছেন পথচারীরা। ঢাকাসহ সারাদেশেই গত কয়েকদিন যাবত হাটে, রাস্তায় বাড়ছে জনসমাগম। এসব বিষয়ে পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি সোহেল রানা বলেন, পুলিশের তৎপরতা কমেনি। সরকারি নির্দেশে কিছু প্রতিষ্ঠান খুলছে। মানুষ স্বাভাবিকভাবেই রাস্তায় বাড়ছে। ডিউটি করতে গিয়ে পুলিশও আক্রান্ত হচ্ছেন।

শেয়ার করুন

আরো খবর