চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে দেশজুড়ে ৭৩টি ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চালানো কথিত বন্দুকযুদ্ধে অন্তত ৭৩ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া পিটিয়ে হত্যাসহ বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে আরো ১৩জনকে। তিন মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘণের ঘটনাও কম হয়নি। শ্রমিকদের উপর হামলা, ছাঁটাইসহ নানা ঘটনা ঘটে গেছে। যা উদ্বেগজনক বলেই জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’।
শুক্রবার সংগঠনটি জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসের প্রতিবেদনে এ উদ্বেগের কথা জানায়। এতে বলা হয়, তিন মাসে ৭৩টি ক্রসফায়ারসহ মোট ৮৬টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।যদিও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বিষয়টি বন্দুকযুদ্ধ হিসেবে বলে থাকে।
প্রতিবেদনে ২০২০ সালের প্রথম তিন মাসের আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতির বিষয়টিও উঠে আসে। গুম, খুনের ঘটনাগুলো ছিল নজিরবিহীন। এছাড়া তিন মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার বিষয়টিও উল্লেখ করে অধিকার। এতে বলা হয়, তিন মাসে ১৪ জনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে সাংবাদিকদের উপর একাধিক হামলা, আক্রমণের ঘটনাও উল্লেখ করে অধিকার।
চলতি বছর তিন মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত নির্বাচন ও উপ নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ বলে জানানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন ও ঢাকা ১০ আসনের উপ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্র দখল, একতরফা নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধীদের এজেন্ট বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। যা নির্বাচনবিধি বেপরোয়া আচরণ বিধি লঙ্ঘন করলেও নির্বাচন কমিশন ছিল নির্বিকার।
বছরের প্রথম তিন মাসে শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টিও বিষদভাবে ব্যাখা করেছে অধিকার। এতে উল্লেখ করা হয়, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে নানাভাবে শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। এছাড়া তৈরি পোশাক খাতেও চরম অবব্যবস্থাপনার কথা উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। মালিকের একচেটিয়া মনোভাব, শ্রমিক ছাটাইসহ নানা অভিযোগের কথা আনা হয়েছে অধিকারের প্রতিবেদনে।
এছাড়া বছরের অন্যান্য সময়ের মতো ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, নারীর উপর অত্যাচার নিপীড়নসহ নানা অনিয়মের চিত্র তুলে ধরা হয় তিন মাসের প্রতিবেদনে। অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়েও বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এতে। অধিকার জানায়, চলমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে আগেই সতর্ক হওয়া উচিত ছিল সরকারের। তাদের হাতে দুই মাস সময়ও ছিল। কিন্তু সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত না নেয়ায় এতটা বিস্তার ঘটেছে।