পাবনার চাটমোহর উপজেলার রাজারদিয়াড় গ্রামে তিন মেয়ে নিয়ে অসহায় জীবনযাপন করা সেই বিল্লাল হোসেনের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল হামিদ মাস্টারসহ অনেকেই। রোববার (১০ মে) ওই বাড়িতে গিয়ে খাদ্যসামগ্রী, শিশুর জন্য দুধ ও নগদ অর্থ তুলে দেন তারা।
এর আগে ভোরে রাইজিংবিডিডটকমে ‘মনে হয় বিষ খায়া মইরে যাই’ শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। পরে এর প্রতিবেদকের সঙ্গে যোগাযোগ করে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ মাস্টার। এরপর তিনি দুপুরে ছুটে যান ওই বাড়িতে। শিশু ফাতেমার বাবা ও বোনের হাতে তুলে দেন খাদ্যসামগ্রী এবং নয় মাসের শিশু ফাতেমার দুধ কেনার জন্য নগদ টাকা।
এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘একটি মা-হারা শিশু টাকার অভাবে দুধ খেতে পারবে না, এটা ভাবতেই কষ্ট লেগেছে। সংবাদটি পড়ার পর সাধ্যমতো সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি।’’ তিনি রাইজিংবিডিকে ধন্যবাদ জানান এমন একটি মানবিক সংবাদ প্রকাশের জন্য।
এদিকে, অনেকেই ওই অসহায় পরিবারকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। সকালে একজন পুলিশ কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) ওই বাড়িতে গিয়ে পরিবারের হাতে দুধ ও ফলমূল তুলে দেন।
দুধসহ খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে হাজির হন চাটমোহর ব্লাড ডোনার ক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট হোটেল ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম এবং ওই সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা।
চাটমোহর উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের রাজারদিয়াড় গ্রামের বিল্লাল হোসেন পায়ে ঘায়ে আক্রান্ত হওয়ায় এখন বিছানায় পড়ে আছেন। তিন মেয়ে নিয়ে অন্যের জায়গায় টিনের ছাপড়া ঘরে বসবাস করছে দরিদ্র পরিবারটি। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় কোনোমতে সংসার চললেও করোনা পরিস্থিতিতে তা আরো দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে।
বিল্লাল হোসেনের নয় মাস বয়সী মেয়ে ফাতেমা খাতুন। জন্মের মাসখানেকের মাথায় মাকে হারায় শিশুটি। বড় দুই বোন বিলকিস ও অঞ্জনা মায়ের আদরে বড় করে তুলছে তাকে। শিশুটির ক্ষুধা লাগলে ভাগ্যে জোটে পানি মিশ্রিত পাতলা সুজি।
নির্মাণ শ্রমিক বাবা বিল্লাল হোসেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি এখন কর্মহীন। অর্ধহারে-অনাহারে থাকতে হয় তাদের।