করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট এক মাসেরও বেশি সময় থাকা বিধি-নিষেধ শিথিল করায় মসজিদে মসজিদে বাড়ছে মুসল্লিদের উপস্থিতি। গতকাল জোহরের নামাজেই সাধারণ মুসল্লিরা অংশ নেয়ার সুযোগ পান। রাজধানীর বায়তুল মোকাররমসহ কয়েকটি মসজিদে দেখা গেছে সাধারণ মুসল্লিরা জামাতে অংশ নিতে। তবে তারা দুরত্ব বজায় রেখেই জামাতে অংশ নেন। একইসঙ্গে সুরক্ষা ব্যবস্থাও দেখা গেছে মসজিদগুলোতে। বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয় এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে শর্তসাপেক্ষে বৃহস্পতিবার জোহরের ওয়াক্ত থেকে মসজিদে জামায়াতে নামাজ আদায় করার অনুমতি দেয়। ফলে সরকারের দেয়া নির্দেশনা মেনেই মসজিদে নামাজ আদায় করা হচ্ছে। কয়েকটি মসজিদে ঘুরে দেখা যায়, আগেই বিছানো কার্পেট সরিয়ে জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করে রাখা হয়েছে মসজিদ।
দুপুরে জোহরের আযানের পর থেকেই বিচ্ছিন্ন ভাবে মুসল্লিদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। প্রায় প্রতিটি মসজিদের প্রবেশ মুখে রাখা হয়েছে জীবাণুনাশক। মুসল্লিরা জীবাণুনাশক দ্রব্য দিয়ে হাত-পা পরিস্কার করে মসজিদে প্রবেশ করছেন। অনেকেই নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসছেন। আগত মুসল্লিদের অনেকেরই অবশ্যই মাস্ক পড়তে দেখা যায়নি। একজন আরেক জন থেকে দূরত্ব বজায় রেখে বসেছেন। মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন মুসল্লিদের করোনা বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করে নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে। মো. রেজাউল করিম নামের এক মুসল্লি মানবজমিনকে জানান, প্রায় এক মাসের বেশি সময় পর আজ মসজিদে এসে জামায়াতে নামাজ আদায় করলাম। মুসল্লিদের উপস্থিতি বাড়ছে। সবাই যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। মসজিদে নামাজ পড়ে যে শান্তি পাওয়া যায়, ঘরে সেটা পাওয়া যায় না। তাই করোনা ভাইরাসের ভয়কে দূরে ঠেলে মসজিদে নামাজ পড়া শুরু করেছেন তারা। শেওড়া পাড়া মসজিদের আরেক মুসল্লি জানান, দেশে করোনা আসার পর থেকেই মসজিদে আসতে পারতাম না। নিকটবর্তী লোকজন আগেই চলে আসতো। ফলে বেশি লোক মসজিদে প্রবেশ করতে পারতো না। গতকাল থেকে সরকার জামায়াতে নামাজ পড়ার অনুমতি দেয়ায় আজ আল্লাহর ঘরে এসে নামাজ আদায় করছি। এখন থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করতে পারবো। রমজানে জামায়াতে নামাজ পড়তে পেরে শান্তি পাচ্ছি। আল্লাহ-ই আমাদেরকে করোনার হাত থেকে রক্ষা করবেন। তারপরেও আমার সবাই স্বাস্থ্য বিধি মেনে মসজিদে আসবো। মোহাম্মদপুর এলাকার এক মসজিদের ইমাম বলেন, মসজিদ আল্লাহর ঘর। আল্লাহ এর রক্ষা করেন। সরকারকে ধন্যবাদ। একমাস বন্ধ থাকার পর এবার সীমিত পরিসরে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের শর্তে দেশের মসজিদগুলো খুলে দেয়ার জন্য। এখন স্বাস্থ্য বিধি মেনে মসজিদে জামাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে পারবো। আমরাসহ মুসল্লিরা এতে অনেক খুশি হয়েছে। এর আগে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবজনিত কারণে সারাদেশে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ৪ঠা এপ্রিল এবং ২৩শে এপ্রিল বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, জুমা এবং রমজান মাসের তারাবির জামাত সীমিত আকারে আদায়ের জন্য নির্দেশনা দেয়।