তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। শিল্প-কারখানা বেশি থাকায় সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে সাভার আশুলিয়া, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ এলাকা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকার সব থেকে কাছের শিল্প এলাকা সাভারে ৭ই মে পর্যন্ত মোট ৬১৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে থেকে ৬৩ জনের করোনা পজেটিভ এসেছে। এদের মধ্যে ২৯ জনই হচ্ছেন বিভিন্ন তৈরীপোশাক কারখানার শ্রমিক। সাভারে গত ১৩ই এপ্রিল প্রথম করোনায় আক্রান্ত হন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের একজন চিকিৎসক। এঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ প্রায় ৪২ জনের একটি দল হোম কোয়ারেন্টিনে চলে যান। এছাড়া গত ১৭ই এপ্রিল সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়নের ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মারা যান।
করোনা আক্রান্তদেরকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি আমিনবাজার ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়। এছাড়াও উন্নত চিকিৎসার জন্য অনেক রোগীকে মিরপুর লালকুঠি, কুর্মিটোলা হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে সাভার ও আশুলিয়া একের পর এক পোশাক শ্রমিক করোনা পজিটিভ হওয়ায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে স্থানীয়দের মাঝে। মঙ্গলবার বিকালে সাভার ডগরমোড়া এলাকায় একটি বাড়িতে লাল পতাকা ঝুলিয়েছে সাভার থানা পুলিশ। জানা যায়, ওই বাড়ির এক ভাডাটিয়া সাভার উলাইলে আল মুসলিম গ্রুপের পোশাক কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। করোনা উপসর্গ থাকায় তাকে ১৪ দিনের হোম আইসোলেশন পাঠানো হয়। বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ঐ বাড়িটিতে লাল নিশানা টাঙিয়ে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওই বাড়ির চারপাশ ঘিরে বেরিকেড দিয়ে দেয় স্থানীয় বাসিন্দারা। ভয়ে ঐ রাস্তা দিয়ে লোক চলাচল বন্ধ হয়ে যায় সাভার ও আশুলিয়ায় ছোট বড় সব মিলিয়ে ১ হাজার ৩৬৫ টি পোশাক কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে বুধবার সাভার-আশুলিয়ায় ৭৬০টি কারখানা চালু ছিল বলে জানান শিল্প পুলিশের কর্মকর্তা জানে আলম খান। তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত কোন কারখানা লকডাউন হয়নি।
এদিকে গাজীপুর থেকে আমাদের স্টাফ রিপোর্টার জানান, জেলায় এ পর্যন্ত আট জন পোশাক শ্রমিক আক্রান্ত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম। তবে জেলা গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে অন্তত ৯ জন পোশাক কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, এ পর্যন্ত পোশাক কারখানার ছয় জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম ইপিজেডে ২ জন, কর্ণফুলি ইপিজেডে একজন শ্রীলঙ্কান নাগরিক আক্রান্ত হয়েছেন। বাকি দুই জন চট্টগ্রাম নগরীর।