হবিগঞ্জে শসার ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু করোনার পরিস্থিতিতে দূরের পাইকাররা না আসার কারণে দাম কমে যাওয়ায় হতাশ কৃষক। বিক্রির পরিমাণ কম, শসার কেজি নেমেছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। তবে স্থানীয় পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা কৃষকদের কাছ থেকে শসা কিনে ভোক্তাদের কাছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছে।
সূত্র জানায়, জেলার মাধবপুর উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়ন এলাকায় শসার ব্যাপক চাষ হচ্ছে। কৃষকরা প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শসার চাষ করেছে। পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে শসার চাষ বেড়ে যায়। কিন্তু এ বছর রমজান মাসে কৃষকরা কাঙ্খিত মূল্য না পেয়ে হতাশায় রয়েছেন।
এ ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ, চাঁন মিয়া, ফারুক মিয়া মিলে ২৪০ শতক জমিতে শসা চাষ করেছেন। ভাল ফলনও হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই খড়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জমি। তারপরও তারা হাল ছাড়েননি।
বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, নরসিংদী এলাকার পাইকাররা না আসায় এসব কৃষকের উৎপাদিত শসা বিক্রির পরিমাণ কম। যে কারণে কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে এই ফসলটি।
কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, ২৪০ শতক জায়গায় শসা চাষ করতে পৌণে ৩ লাখ টাকার মত খরচ হয়। এখন পর্যন্ত দেড় লাখ টাকারমত বিক্রি হয়েছে। অনেক জমিতে ভাইরাস আক্রমণ করেছে। শসার ভাল ফলন হলেও খড়ার কারণে অনেক শসা গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
আলাপকালে অন্য কৃষকরা জানান, বর্তমান পাইকারী বাজারে শসার দাম কম। তাই যে টাকা দিয়ে জমিতে শসা উৎপাদন করা হয়েছে, তা বিক্রি করে পাওয়া যাচ্ছে না। শসার দাম না থাকায় কৃষকরা শ্রমিকদের ঠিকমত মজুরি দিতে পারছেন না। প্রত্যেক শ্রমিককে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দিতে হয়।
জেলার পুরানবাজারের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ক্রেতা জানান, কৃষকের কাছ থেকে কম দামে ক্রয় করা হলেও পরিবহন খরচ বেশি দিতে হয়। এ অনুপাতে কিছু লাভ করে তারা ক্রেতাদের কাছে শসা বিক্রি করছেন।
ক্রেতা কামাল মিয়া জানান, প্রথম রমজানে শসার কেজি ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। বর্তমানে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. জালাল উদ্দিন জানান, জেলায় প্রায় ১০০ হাজার হেক্টর জমিতে শসা চাষ হয়েছে। জেলার মধ্যে মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শসার ব্যাপক চাষ হয়ে আসছে। শসার চাষ বাড়াতে কৃষকদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। করোনার কারণে বাহিরের পাইকাররা না আসায় শসার প্রকৃত মূল্য পাচ্ছেন না কৃষকরা। যাই হোক প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। কৃষকদের ঋণ দেওয়া হবে। যদি এটি চলমান হয়, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের এ ঋণের আওতায় আনতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। যদিও এখন পর্যন্ত অফিসিয়ালভাবে কিছু আসেনি।