বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে এক প্রবাসীর মৃত্যুর ঘটনায় বৈমানিকের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণে ওই বৈমানিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিমান।শনিবার (১ এপ্রিল) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।সূত্র জানায়, গত বুধবার (২৯ মার্চ) বৈমানিক দিলদার আহমেদ তোফায়েলকে একটি চিঠি দিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক (প্রশাসন) মো. ছিদ্দিকুর রহমান স্বাক্ষরিতে চিঠিতে বলা হয়, গত ১৫ জানুয়ারি জেদ্দা থেকে ছেড়ে আসা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি ৩৩৬ ফ্লাইটের ক্যাপ্টেন ছিলেন দিলদার আহমেদ তোফায়েল। ফ্লাইটটি টেকঅফের পর সৌদি প্রবাসী যাত্রী কবীর আহমেদ অসুস্থ বোধ করেন। কেবিন ইনচার্জ বিষয়টি পাইলট ইন কমান্ড হিসেবে দিলদার আহমেদকে বিষয়টি অবহিত করেন। দিলদার আহমেদ ফ্লাইটে কোনো চিকিৎসক আছেন কি না মাইক্রোফোনে জানতে চান। এরপর ককপিট ত্যাগ করে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বাংকে চলে যান। নিয়মানুযায়ী সিঙ্গেল সেট ফ্লাইটে বাংকে বিশ্রাম নেওয়া নিয়মবহির্ভূত।
আরও পড়ুন: বিমানের ই-মেইল সার্ভার হ্যাকে তেমন ক্ষতি হয়নি
ক্যাপ্টেনের অনুপস্থিতিতে ফ্লাইটে পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিএএবি) ফ্লাইট অপারেশনস ইন্সপেক্টর ক্যাপ্টেন ফরিদুজ্জামান ক্যাপ্টেনের আসনে বসেন, যা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী একজন লাইসেন্সহীন বৈমানিক পারেন না।চিঠিতে আরও বলা হয়, অসুস্থ যাত্রীর কথা জানার পরও ক্যাপ্টেন দিলদার আহমেদ ককপিট ত্যাগ করে বিশ্রাম নিতে বাংকে চলে যান। তবে ফ্লাইটে উপস্থিত যাত্রী ডা. এ বি এম হারুন অসুস্থ যাত্রীকে দেখেন এবং অবস্থা ক্রমান্বয়ে খারাপ হওয়ায় কাছাকাছি কোনো বিমানবন্দরে অবতরণের পরামর্শ দেন। কিন্তু দিলদার আহমেদের অনুপস্থিতিতে ক্যাপ্টেন ফরিদুজ্জামান কাছাকাছি কোনো বিমানবন্দরে অবতরণ না করে ফ্লাইটটি সরাসরি ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করান, যা প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না। ফ্লাইট অবতরণের পর দিলদার আহমেদ অসুস্থ যাত্রীকে রেখেই উড়োজাহাজ ত্যাগ করেন।
উড়োজাহাজটি অবতরণের পর বিমানবন্দরে ১৪ নম্বর বে-তে থামার জায়গা দেয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে অ্যাম্বুলিফট ও অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হওয়ায় কবীর আহমেদকে নামাতে দেরি হয়। প্রায় ৪০ মিনিট পর উড়োজাহাজ থেকে কবীর আহমেদকে নামিয়ে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পর থেকে চুক্তিভিত্তিক ক্যাপ্টেন দিলদার আহমেদ তোফায়েলকে আর কোনো ফ্লাইট দেওয়া হয়নি বলে বিমান কর্মকর্তারা জানান।
আরও পড়ুন:‘মিথ্যা সংবাদ তরুণ প্রজন্মকে উসকানি দেওয়ার অপচেষ্টা’