বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩, ১২:৩৩ অপরাহ্ন

সিএনএসের সার্ভার হ্যাক করে কোটি টাকা আত্মসাৎ গ্রেপ্তার ৬

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৪ মে, ২০২৩
  • ২৯

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সিএনএসের সার্ভার হ্যাক করে অভিনব পন্থায় প্রতারণাকারী ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। চক্রটি ৪০০ গ্রাহকের ১ কোটি ২০ লাখ সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন চক্রটির হোতা কম্পিউটার প্রকৌশলী শাহরিয়ার ইসলাম ও তাঁর অন্যতম সহযোগী আজিম হোসেন। রোববার রাতে রাজধানীর মিরপুর, কাফরুল ও গাজীপুর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। অন্য চারজন হলেন শিমুল ভূঁইয়া, রুবেল মাহমুদ, ফয়সাল আহাম্মদ ও আনিচুর রহমান। তাঁদের কাছ থেকে সিপিইউ, মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, পেনড্রাইভ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই ও ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬৫৯ টাকা উদ্ধার করা হয়।

সোমবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মিরপুরে ‘মায়ের দোয়া বিজনেস সেন্টার’ ও ‘চাঁদপুর বিজনেস সেন্টার’– দুটি দোকানের মাধ্যমে চক্রটি সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে মালিকানা পরিবর্তন করার জন্য কাগজপত্র সংগ্রহ করত। পরে তারা গাড়ির সব কাগজপত্র স্ক্যান করে হ্যাকিংয়ের কাজে প্রস্তুত করা সফটওয়্যার থেকে নকল কোড ব্যবহার মানি রিসিপ্টের কপি সহযোগী ফয়সাল ও আনিচুরের কাছে পাঠিয়ে দিত। তাঁরা সেটা গ্রাহককে বুঝিয়ে দিয়ে নগদ অর্থ গ্রহণ করতেন। গ্রাহকরা ওই মানি রিসিপ্ট দিয়েই বিআরটিএর অফিসিয়াল কাজ শেষ করতে পারতেন।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, বিআরটিএর সেবাদানকারী সিএনএস লিমিটেডের সফটওয়্যার দুর্বল হওয়ায় খুব সহজেই হ্যাক করেন অপরাধীরা। আর শুধু বিআরটিএ নয় ডেসকোর ওয়েবসাইটও হ্যাক করেছিল চক্রটি। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১০ মে সিএনএস কোম্পানির মাসিক লেনদেনের বিবরণীর সঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের লেনদেন যাচাই শেষে বিআরটিএর ৩৮৯টি ট্রানজেকশনে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার গরমিল পাওয়া যায়। সিএনএসের ওয়েবসাইটে ওই ট্রানজেকশনের পেমেন্ট স্ট্যাটাস ‘পেইড’ দেখালেও মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা জমা হয়নি। পরে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে র‌্যাব।খন্দকার আল মঈন বলেন, সিএনএসের কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভিস একটি সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি। এটি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং কোম্পানির সফটওয়্যার ও প্রযুক্তিবিষয়ক কার্যাদি করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি বিআরটিএর সঙ্গে ১০ থেকে ১১ বছর ধরে চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে বিভিন্ন গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন, ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফিসহ অন্যান্য ফি ব্যাংক ও অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে বিআরটিএতে জমা করত।আসামিদের বরাতে র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার শাহরিয়ার হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে সিএনএসের ওয়েবসাইটের পেমেন্ট গেটওয়ে হ্যাক করে মানি রিসিপ্ট প্রস্তুত করত। এভাবে গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন, ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, রেজিস্ট্রেশন ফিসহ বিভিন্ন কাজে অর্থ সংগ্রহ করত। অর্থ পরিশোধের মানি রিসিপ্ট গ্রাহকদের দেওয়া হলেও কোনো টাকা সরকারি ফান্ডে জমা করত না।

আরো পড়ুন: মাদকবিরোধী অভিযানে রাজধানীতে আটক ৪৩

শেয়ার করুন

আরো খবর